info@breakingthesilencebd.org
  • উত্তরঃ দেখুন এটি এমন একটি বিষয়, যে সবাই এ ব্যাপারে সচেতন নয়। এ ধরনের ঘটনা অনেক বাচ্চার সাথে ঘটে, আগেও অনেক ঘটেছে। সব মা-বাবা এ ব্যাপারে কারো সাথে কথা বলেন না। মনে করেন বিষয়টি সবাই জানলে বাচ্চার জন্য ক্ষতি হবে। কিন্তু তারা ভুল করেন, ফলে এ ঘটনাটি যে বাচ্চার সারা জীবনের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে তা তারা বুঝতে পারেন না। আপনি একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনার বাচ্চাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য আমার কাছে এনে খুব ভালো কাজ করেছেন।
  • উত্তর মানুষ তাকেই ঘৃণা করে যে অপরাধী। আপনার বাচ্চা অপরাধী নয়, সে ঘটনার শিকার মাত্র। এর জন্য শিশুটি কোনক্রমেই দায়ী নয়। অপরাধী সে-ই যে আপনার শিশুকে নির্যাতন করেছে। যে র্ঘণার যোগ্য সমাজ তাকেই ঘৃণা করবে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি,-আপনার ঘরে যদি কোন ডাকাত এসে ডাকাতী করে তাহলে কে অপরাধী, আপনি, না ডাকাত ?
  • উত্তর আপনার দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। ওর কিছুই হয়নি। ওকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিতে পারি ক. প্রচন্ড মানসিক আঘাতের ক্ষেত্রে আমরা তাকে নিয়মিত কাউন্সিলিং-এর জন্য একজন কাউন্সিলারের কাছে নিতে পারি ।
    খ. শারীরিক সমস্যাটি সমাধানের জন্য চিকিৎসকের কাছে নিতে পারি।
    গ. মনের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য তার কোন পছন্দের জায়গায় নিয়ে যেতে পারি।
    ঘ. তার সাথে এমন কোন আচরণ না করা বা কথা না বলা যাতে সে মনে আঘাত পায়।
    ঙ. বাচ্চাটির কিছু হয়নি কথায় ও ব্যবহারে তা প্রকাশ করা।
    চ. কোন শেলটার হোমে তাকে কিছুদিনের জন্য রাখতে পারি।
    ছ. পারিবারিক সকল কাজে শিশুর অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করবেন এবং তাকে সব সময় কাজে উৎসাহিত করবেন।
    জ. ওর সাথে খেলাধলা গল্পের বই পড়তে দেয়া ও বেড়াতে নিয়ে যাবেন যেখানে সে বেড়াতে যেতে চায়।
    ঝ. আপনি যদি কোন আইনগত সাহায্য চান তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আমি আপনাকে নিয়ে যেতে পারি।

উত্তর অবশ্যই পারবে, তবে একটু সময় লাগতে পারে। আপনাদের একটু ধৈর্য রাখতে হবে। বাচ্চাকে সার্বিক সহায়তা দিতে হবে। আমি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধ দিয়ে আপনাদের সাহায্য করতে পারি। বাচ্চার অবস্থানে যেয়ে বিষয়টি ভাবুন, যা তার স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে সাহায্য করবে।

উত্তর শিশুর কোন অপরাধ ছিলো না। এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে ঘটে থাকে। শিশু যদি এই বিষয়টি আগে থেকে জানতো তাহলে হয়তো তা ঘটতো না। নিজেকে রক্ষা করার বিষয়টি জানা থাকলে হয়তো সে নিজেকে রক্ষা করতে পারতো।

উত্তর বাচ্চার সাথে আগের চেয়ে আরও বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। বেশি সঙ্গ দেবেন । ঘটনার জন্য কখনোই তাকে দোষী বা দায়ী করা যাবে না। শিশুটির সঙ্গে সারাক্ষণ কষ্টের ঘটনাটি আলোচনা না করে বরং তাকে কোন সৃজণশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন (ছবি আঁকা, বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, পছন্দনীয় কোন কাজের সাথে যুক্ত করা)। তার ইচ্ছার প্রাধান্য দেবেন। জোর করে কোন কাজ চাপিয়ে দেবেন না। সব সময় কষ্টের কথা আলোচনা না করে হাসি ঠাট্রার মধ্য দিয়ে তাকে আনন্দ দেবার চেষ্টা করবেন। তার কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকলে যার সঙ্গে সে মন খুলে সব কথা বলে তাকে বেশি করে শিশুটির কাছে আনতে হবে।

উত্তর যেসব বন্ধু ওর সমালোচনা করে এবং ঘেন্না করে, হাসাহাসি করে তাদের কাছ থেকে শিশুটিকে দূরে রাখতে হবে। প্রয়োজনে এমন কোন বন্ধুর সাহায্য নিতে পারেন যে কিনা শিশুটির সমস্যাটি বুঝতে পারছে এবং সহমর্মিতা অনুভব করছে, তার সাহায্য নিয়ে অন্যান্য বন্ধুদের ব্যাপারটি বোঝাতে হবে যারা তার সমালোচনা করছে। পরোপকারী কোন প্রতিবেশির সাহায্য নিতে পারেন, যিনি উদ্যোগ নিয়ে বন্ধুদের বোঝাতে পারেন যে এভাবে সমালোচনা করা ঠিক না।

উত্তর এক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে শিশুটিকে সারাক্ষণ সঙ্গদেয়া, যাতে করে সে নিঃসঙ্গ বোধ না করে এবং বুঝতে পারে এ সময় তার পাশে কেউ আছে। তাহলে সে অতটা ভেঙ্গে পরবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে ভেঙ্গে পরলে চলবে না এবং ওকে বুঝতে দেবেন না ওকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই।

উত্তর আপনি আপনার শিশুর সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন। শিশু কি চাচ্ছে সেটা শোনেন। শিশুর আচরণ খেয়াল করুন। ওকে দোষেরোপ বা বকাবকি করবেন না। ওর সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করুন এবং কি বলতে চায় তা মনোযোগ সহকারে শুনুন। ওকে কথা বলার সুযোগ দিন।

উত্তর আপনার শিশুটি ঘটনাটি জানায়নি, কারণ প্রথমতঃ ও আপনাকে বলতে ভয় পাচ্ছিল। কেননা আপনি ওকে ধমক দিতে পারেন, বকাবকি করতে পারেন। এছাড়া লজ্জাও পাচ্ছিলো, কারণ ও হয়তো ভাবছিলো ব্যাপারটি কোন খারাপ কাজ কিনা। দ্বিতীয়তঃ ঘটনাটি আপনি বিশ্বাষ করবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলো।এছাড়া ও হয়তো বুঝতে পারেনি ব্যাপারটি কি ঘটতে যাচ্ছে, কারণ এ বিষয়ে ওর কোন পূর্ব ধারণা ছিলো না। তাই ও সব সময় নিজেকে দোষী ভাবছিলো।

উত্তর না, এটা আপনার শিশুর দোষ নয়। ঘটনাটি যে ঘটিয়েছে এটা তারই দোষ। যেহেতু ও শিশু তাই ব্যাপারটি ঘটায় তার তেমন কোন ধারণা ছিলো না। কাজেই কি ঘটেছে সেটা বুঝতে পারেনি বলেই নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। শিশু এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে দূর্বল ও আতংকগ্রস্ত ছিলো। সে মুখে কিছু বলে নিজেকে রক্ষা করবে, যেমন-‘আপনি আমার সাথে এ রকম কাজ করবেন না। আমি এটা পছন্দ করছি না, আমি সবাইকে বলে দেব’-এই কথাগুলো বলার মতো সাহস তার ছিলো না এবং ধরনের কোন কৌশলও তার জানা ছিলো না।